২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রকৃত অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা চাননি: আসামিপক্ষ

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা চাননি বলে মন্তব্য করেছেন এই মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

 

বৃহস্পতিবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামির খালাসের রায় বহাল রেখে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তারা এই মন্তব্য করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, আজকে রাষ্ট্র কর্তৃক আনিত সব আপিল ও পিটিশান ডিসমিস হয়েছে। অর্থাৎ হাইকোর্ট বিভাগের আসামিদের খালাসের যে রায়, সেটা বহাল আছে। আমি গর্ব অনুভব করি আমার সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে, আমার হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ নিয়ে। তারা ন্যায়ের মানদণ্ড আজকে আবারো উঁচু করে ধরলেন। বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে- এটা আবারো প্রমাণিত হলো।

 

তিনি আরও বলেন, এই মামলা সঠিকভাবে তদন্ত করেনি বলে হাইকোর্ট বিভাগ যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল পুনঃতদন্তের, সেটা রাষ্ট্রের কাজ, বিচার বিভাগের না। কারণ এটিকে এক্সপান্স করা হয়েছে। আর তারেক রহমানসহ অন্যান্য যারা আপিল করতে পারেননি, তাদের বেলায়ও খালাসের আদেশ প্রযোজ্য হবে।

 

এস এম শাহজাহান বলেন, তারেক রহমানসহ এই মামলায় যারা আছেন, তারা বেকসুর খালাস। এই মামলায় আর কোনো সাজা কারো নেই। আদালতের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে কাউকে ফাঁসি দেওয়া যাবে না- এটা আবারো প্রমাণিত হলো। এই ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, মুফতি হান্নানের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির ওপর এই মামলাটি ছিল। কিন্তু আজকে প্রধান বিচারপতি যখন রায় পড়ে শোনালেন, তখন তিনি বলেছেন, সিলেটে আনোয়ার চৌধুরীর ওপরে গ্রেনেড হামলা মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসির সাজা হয়েছিল। সেখান থেকে এনে দ্বিতীয়বার তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু তিনি নন, এই মামলায় অন্য যাদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছিল তারা কেউ স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেননি বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। স্বেচ্ছায় যদি কেউ স্বীকারোক্তি না দেয়, তাহলে সেই স্বীকারোক্তির কোনো মূল্য নেই।

 

তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজকে যে রায় দিয়েছেন, সেই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই মামলাটি অত্যন্ত মানবিক অপরাধ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা রাজনৈতিক উদ্দেশে, ব্যক্তিগত জিঘাংসা থেকে তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। আজকে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, তারেক রহমান নির্দোষ এবং তিনি খালাস পেয়েছেন।

 

তিনি আরও বলেন, আজকে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থে আইভি রহমানসহ যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের বিচার তিনি চাননি। যদি শেখ হাসিনা প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাইতেন, তাহলে হয়তো রাজনৈতিক জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে তারেক রহমানকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতেন না।

 

এসময় আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও বিএনপিপন্থি আইনজীবী মাহাবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশে বিপজ্জনক শক্তির উত্থান ঘটছে: রিজভী

» লোক দেখানো নয়, ফাঁসিই হবে খুনি হাসিনার শেষ গন্তব্য: সারজিস আলম

» তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: বাবর

» নুরকে দেখতে গেলেন আইন উপদেষ্টা

» নাশকতার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন ফখরুল-আব্বাসসহ ৭০ জন

» গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে: তারেক রহমান

» ‘তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে’

» লোক দেখানোর জন্য খুনি হাসিনার বিচার করবো না: সারজিস আলম

» জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা

» প্রায় ১৮ বছর পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লুৎফুজ্জামান বাবর

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রকৃত অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা চাননি: আসামিপক্ষ

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা চাননি বলে মন্তব্য করেছেন এই মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

 

বৃহস্পতিবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামির খালাসের রায় বহাল রেখে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তারা এই মন্তব্য করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, আজকে রাষ্ট্র কর্তৃক আনিত সব আপিল ও পিটিশান ডিসমিস হয়েছে। অর্থাৎ হাইকোর্ট বিভাগের আসামিদের খালাসের যে রায়, সেটা বহাল আছে। আমি গর্ব অনুভব করি আমার সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে, আমার হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ নিয়ে। তারা ন্যায়ের মানদণ্ড আজকে আবারো উঁচু করে ধরলেন। বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে- এটা আবারো প্রমাণিত হলো।

 

তিনি আরও বলেন, এই মামলা সঠিকভাবে তদন্ত করেনি বলে হাইকোর্ট বিভাগ যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল পুনঃতদন্তের, সেটা রাষ্ট্রের কাজ, বিচার বিভাগের না। কারণ এটিকে এক্সপান্স করা হয়েছে। আর তারেক রহমানসহ অন্যান্য যারা আপিল করতে পারেননি, তাদের বেলায়ও খালাসের আদেশ প্রযোজ্য হবে।

 

এস এম শাহজাহান বলেন, তারেক রহমানসহ এই মামলায় যারা আছেন, তারা বেকসুর খালাস। এই মামলায় আর কোনো সাজা কারো নেই। আদালতের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে কাউকে ফাঁসি দেওয়া যাবে না- এটা আবারো প্রমাণিত হলো। এই ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, মুফতি হান্নানের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির ওপর এই মামলাটি ছিল। কিন্তু আজকে প্রধান বিচারপতি যখন রায় পড়ে শোনালেন, তখন তিনি বলেছেন, সিলেটে আনোয়ার চৌধুরীর ওপরে গ্রেনেড হামলা মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসির সাজা হয়েছিল। সেখান থেকে এনে দ্বিতীয়বার তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু তিনি নন, এই মামলায় অন্য যাদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছিল তারা কেউ স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেননি বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। স্বেচ্ছায় যদি কেউ স্বীকারোক্তি না দেয়, তাহলে সেই স্বীকারোক্তির কোনো মূল্য নেই।

 

তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজকে যে রায় দিয়েছেন, সেই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই মামলাটি অত্যন্ত মানবিক অপরাধ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা রাজনৈতিক উদ্দেশে, ব্যক্তিগত জিঘাংসা থেকে তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। আজকে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, তারেক রহমান নির্দোষ এবং তিনি খালাস পেয়েছেন।

 

তিনি আরও বলেন, আজকে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থে আইভি রহমানসহ যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের বিচার তিনি চাননি। যদি শেখ হাসিনা প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাইতেন, তাহলে হয়তো রাজনৈতিক জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে তারেক রহমানকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতেন না।

 

এসময় আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও বিএনপিপন্থি আইনজীবী মাহাবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com